Saturday, April 23, 2011

ইউনিপেটুইউ: সাবেক জামায়াত নেতা গ্রেপ্তার

বান্দরবান, এপ্রিল ২২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- অর্থ আত্মসাৎ মামলায় বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সাবেক জামায়াত সভাপতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বৃস্পতিবার রাতে আবুজর গেফারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুক্রবার আদালতে হাজির করলে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

দেশব্যাপী বহুল আলোচিত 'ইউনিপেটু ইউ'র টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন আলীকদমের চৈক্ষ্যং ইউনিয়নের রোয়াম্ভু পাড়ার বশির আহমদ।

এদিকে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সরকার বিরোধী লিফলেট বিতরণের অভিযোগে শহরের বালাঘাট এলাকার জেলা পুলিশ লাইন্স মসজিদ থেকে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

আলীকদম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, বশির আহমদের মামলায় (নম্বর ০২) বলা হয়, বাদী বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ইউনিপেটু'র আলীকদমের কর্মী মাওলানা আবুজর গেফারীকে লাভের আশায় টাকা দেন। কিন্তু ইউনিপেটু বন্ধ হলে তিনি আবুজর গেফারীর কাছে তার টাকা ফেরত চেয়ে পাননি।

তাই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনি মামলা করেন।

এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা জামায়াত সেক্রেটারি আবুল কালাম বলেন, আবুজর গেফারী একসময় জামায়াতের আলীকদম উপজেলা সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন।

এদিকে বান্দরবান সদর থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ফখরুল ইসলাম জানান, জুমার নামাজের পর জেলা শহরের বালাঘাটা এলাকায় সরকার বিরোধী লিফলেট বিতরণের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

এরা হলেন- শাহ আলম (১৮), দেলোয়ার হোসেন (১৮) ও আনোয়ার হোসেন (১৮)।

এরা সবাই বালাঘাটা এলাকার বাসিন্দা এবং চট্টগ্রামের পটিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।

আটক শাহ আলম ও দেলোয়ার হোসেন জানান, তারা বালাঘাটা পুলিশ লাইন মসজিদে জুমার নামাজ শেষে সামনে পড়ে থাকা একটি কাগজ দেখে পড়ার সময় পুলিশ তাদের আটক করে। তারা লিফলেট বিতরণের সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/প্রতিনিধি/ডিডি/২১০০ ঘ.

Friday, April 22, 2011

সিলেটে ইউনিপেটুইউর এমডিসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Prothom Alo :
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট :
সিলেটে ইউনিপেটুইউর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুনতাসির হোসেনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ইউনিপেটুইউর গ্রাহক মনসুর আহমদ গত বুধবার এ মামলা করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিলেট নগরের সুরমা মার্কেটের ব্যবসায়ী মনসুর আহমদ বুধবার সিলেটের মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেন। আদালত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কোতোয়ালি থানার পুলিশকে নির্দেশ দেন। আগামী ২৬ মের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নওরোজ আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) পর্যন্ত আদালতের আদেশ থানায় পৌঁছেনি। আদেশ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলায় মনসুর আহমদ অভিযোগ করেন, ঢাকার শাহবাগ এলাকার মোতালিব টাওয়ারের পঞ্চম তলায় ইউনিপেটুইউ লিমিটেডের কার্যালয় খোলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনতাসির হোসেন, পরিচালক শহিদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক লিটু। তাঁরা সিলেটের স্থানীয় এজেন্ট জুয়েল আহমদ, সানোয়ার হোসেন, লোকমান আহমদ, আবু ছালেহ মুসা, আকবর আলী খন্দকার, রফিকুল হক ও জামিল আহমদের মাধ্যমে সিলেটে ইউনিপেটুইউর কার্যক্রম শুরু করেন। এজেন্টরা তাঁকে জানান, স্বর্ণ ও টাকা বিনিয়োগ করলে মাসিক ২৩ ভাগ সুদে লাভজনক ব্যবসা করা যাবে।
মনসুর আহমদ জানান, এ ধরনের প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে তিনি পাঁচ কিস্তিতে নগদ ও চেকের মাধ্যমে দুই লাখ ২০ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ১১ লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা জমা দেন। এ হিসাবে মুনাফা ও আসলসহ তাঁর মোট পাওনা ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ টাকা। কিন্তু ইউনিপেটুইউ কর্তৃপক্ষ এই টাকা পরিশোধ করেনি। গত ৮ মার্চ এ ব্যাপারে একটি আইনি নোটিশ পাঠানোর পরও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কোনো জবাব না দেওয়ায় তিনি মামলা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে ইউনিপেটুইউর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনতাসির হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

সিলেটে ইউনিপে গ্রাহকদের স্মারকলিপি



ব্যাংক হিসাব খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল সিলেটে ইউনিপের কয়েক শ' গ্রাহক বিক্ষোভ মিছিলসহকারে সিটি করপোরেশনের মেয়র, প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। একই দাবিতে তারা ৩০ এপ্রিল সিলেটে মহাসমাবেশও আহ্বান করেছেন। ওই সমাবেশ থেকে সিলেটে হরতাল ও ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন গ্রাহকরা। জানা গেছে, সিলেট বিভাগে ইউনিপে টু ইউ'র প্রায় দুই লাখ গ্রাহক রয়েছেন। তাদের বিনিয়োগ করা প্রায় সাড়ে চারশত কোটি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন তারা। ব্যাংক হিসাব বন্ধ থাকায় কোম্পানির পাঠানো ডলার নগদায়ন হচ্ছে না বলে অভিযোগ করছেন ইউনিপের গ্রাহকরা এদিকে, দশমাসে দ্বিগুণ মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ১১ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইউনিপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ দশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক গ্রাহক। গ্রাহকদের রোষানল থেকে বাঁচতে সিলেট নগরীর সবকটি এজেন্সির কর্মকর্তারা গা ঢাকা দিয়েছেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র, জয়েন্ট স্টক এক্সচেঞ্জে নিবন্ধন ও আমদানি-রপ্তানি সনদ, ট্রেড লাইসেন্স, ইনকাম ট্যাক্স ও ভ্যাট লাইসেন্স থাকায় গ্রাহকরা ইউনিপে টু ইউতে বিনিয়োগ করেছেন। গত দেড় বছর সরকার ইউনিপের কাছ থেকে আয়কর, ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায় করেছে। কিন্তু হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কোম্পানির লাখ লাখ গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দেয়। এতে বিনিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন গ্রাহকরা। এ প্রসঙ্গে ইউনিপে গ্রাহক ফোরাম সিলেট বিভাগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ মাহমুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সিলেটের সব গ্রাহককে এক প্লাটফর্মে আনার লক্ষ্যে গ্রাহক ফোরাম গঠন করা হয়েছে।

Thursday, April 14, 2011

 শেয়ারবাজার তদন্ত প্রতিবেদন ১০ টাকার শেয়ার দাম বাড়ানোর আরেক কারসাজি


Prothom Alo:
 
দাম বাড়ানোর আরেকটি কৌশল ছিল শেয়ারের বিভাজন। ১০০ টাকার শেয়ার ১০ টাকা করতেই দাম বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এ কাজে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েছে কোম্পানিগুলো।
৭ এপ্রিল খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি অর্থমন্ত্রীর কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনে নানাভাবে কারসাজি করে শেয়ারবাজার পতনের অনেকগুলো ঘটনার কথা জানানো হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্টক স্প্লিট’ বা বিভাজনের মাধ্যমে শেয়ারের অভিহিত মূল্যকে খণ্ডিত করে অপেক্ষাকৃত স্বল্প বা ছোট করা হয়। যদিও শেয়ার বিভাজনের ফলে অভিহিত মূল্য সমন্বয় ছাড়া কোম্পানির আয় বা সম্পদের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না, প্রভাব থাকার কথাও নয়। কিন্তু তদন্তে দেখা গেছে, শেয়ার বিভাজনের কারণে ২০০৯-১০ সালে পুঁজিবাজারে শেয়ারের মূল্য ও তারল্যের ওপর অপ্রত্যাশিত প্রভাব পড়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মনস্তাত্ত্বিক দুর্বলতাকে পুঁজি করে বিভাজিত শেয়ার কেনার প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়ে শেয়ারের বাজারমূল্যের ওপর অতিমাত্রায় প্রভাব ফেলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৯ ও ২০১০ সালে মোট ৬২টি তালিকাভুক্ত কোম্পানি শেয়ার বিভাজন করেছে। কোম্পানিগুলো শেয়ার বিভাজন শুরু করে ২০০৯-এর জুলাই থেকে। ৯ জুলাই প্রথম শেয়ার বিভাজনের ঘোষণা দেয় প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। এর পর থেকে ২০১০-এর ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে পুঁজিবাজারের বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। যেমন, ২০০৯ সালের ২ জুলাই অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা থেকে ১০ টাকায় বিভাজন করা ৬১টি কোম্পানির বাজার পুঁজিকরণ ছিল ৩০ হাজার ছয় কোটি টাকা। আর ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর তা হয় দুই লাখ ২৬ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ বৃদ্ধির হার ৬৫৫ শতাংশ। অন্যদিকে অবিভাজিত কোম্পানিগুলোর বাজার পুঁজিকরণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা, এক বছর পর সেটি দাঁড়ায় এক লাখ ৪১ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৪৬ শতাংশ।
এসব তথ্য দিয়ে তদন্ত কমিটি বলেছে, এক বছরে বাজার পুঁজিকরণ বাড়ার পেছনে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের কোম্পানিগুলোর অবদান ছিল সাড়ে ৮১ শতাংশ। আর এই ৬২টি কোস্পানির মধ্যে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৫টি। এর বাইরে বিমা কোম্পানি ছিল ২১টি। তবে সবচেয়ে বেশি পুঁজিকরণ বেড়েছে টেক্সটাইল খাতের কোম্পানিগুলোর।
কমিটি আরও বলেছে, শেয়ার বিভাজনের কারণে শেয়ার মূল্যের ওপর সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা হলেও এর কার্যকারিতা বেশ খানিকটা ব্যাহত হয়। শেয়ারমূল্যের স্তর যত বড় হবে, শেয়ারমূল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আরোপিত সার্কিট ব্রেকারের হারও তত কম হবে। প্রতিবেদনে উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, শেয়ারমূল্য ২০০ টাকা পর্যন্ত সার্কিট ব্রেকার ২০ শতাংশ, আর শেয়ারের বাজার দর পাঁচ হাজার টাকার ঊর্ধ্বে হলে সার্কিট ব্রেকার সাড়ে ৭ শতাংশ। শেয়ার বিভাজনের কারণে উচ্চতর সার্কিট ব্রেকার প্রযোজ্য হয় বলে বিভাজিত শেয়ারগুলো বাজারমূল্য বা বাজার পুঁজিকরণ দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে।
কমিটি মনে করে, শেয়ার বিভাজন প্রসঙ্গে এসইসির ভূমিকাও অত্যন্ত দোদুল্যমান বা দৃঢ় ছিল না। এসইসি ২০১০ সালের ১ মার্চ সার্কুলার দিয়ে সব শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা ধার্য করে দেয়। পরে আবার ১০ মে সেটি পরিবর্তন করে ১০ টাকা হয়। আবার সেটিও স্থগিত করা হয় ২০১১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। এসইসির ঘন ঘন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন বাজার নিয়ন্ত্রণকারীদের দুর্বলতা প্রকাশ করে এবং ওই সুযোগ ব্যবহার করে বাজার কারসাজির হোতারা।
লুৎফর রহমানের প্রতিবাদ: মো. লুৎফর রহমান বাদল গতকাল এক প্রতিবাদলিপিতে বলেছেন, কিছুদিন ধরে কয়েকটি পত্রিকা দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে কদর্যভাবে মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করে চলেছে। এসব সংবাদের পক্ষে কোনো প্রকার তথ্য, যুক্তি কিংবা প্রমাণের তোয়াক্কা না করে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে, তা সুস্থ সাংবাদিকতার পরিপন্থী এবং আইনগতভাবেও গ্রহণযোগ্য নয় বলে তাঁদের আইনজীবীরাও নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদনে জোর দিয়েই বলা হয়েছে কোনো ব্যক্তিবিশেষ নয়, বরং গোটা ব্যবস্থাই ধসের কারণ। আর ব্যবসামাত্রই মুনাফার জন্য, সে ক্ষেত্রে আইনের মধ্যে থেকে কেউ যদি কোনো প্রকার কৌশলের আশ্রয় নিয়েও থাকেন, তা দেখার বা বন্ধ করার দায়িত্ব নিয়ন্ত্রক সংস্থা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারের। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ ছাড়া ঢালাও অপপ্রচার দেশের ব্যবসা ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকারক হবে। লুৎফর রহমান কোনো আইনবহির্ভূত কাজ করেননি উল্লেখ করে চিঠিতে গণমাধ্যমের কাছে জবাবদিহি দাবি ও অবিলম্বে সংবাদ প্রকাশ বন্ধের দাবি জানান।
প্রতিবেদকের বক্তব্য: প্রকাশিত সব সংবাদই তদন্ত প্রতিবেদন থেকে নেওয়া। এখানে নিজস্ব কোনো বক্তব্য ছিল না।
 
 

পুঁজিবাজারে অস্থিরতা 'কেবল সেনা শাসনেই তাদের বিচার সম্ভব'



বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ঢাকা, এপ্রিল ১৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- পুঁজি বাজারে অস্থিরতার কারণ তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, গত ডিসেম্বর-জানুয়ারি সময়ে শেয়ার বাজার ফুলে ফেঁপে ওঠার পর ব্যাপক দরপতনের পেছনে যারা দায়ী, কেবল সেনা শাসনেই (মার্শাল ল') তাদের বিচার সম্ভব।

কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বাধীন চার সদ্যসের ওই তদন্ত কমিটি গত ৭ এপ্রিল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে যে প্রতিবেদনটি জমা দেন তা তৈরি হয়েছে মূলত শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে।

বৃহস্পতিবার টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যদি মনে করেন যে, ধরে ধরে শাস্তি দিলে হবে। ধরে শাস্তি দেওয়া তো এতো সোজা না। আদালত আছে। আদালত তো সব সময় আসামির পক্ষে। কোর্ট কখনো নালিশকারীর পক্ষে থাকে না। '৯৬ সালে তো মামলা হয়েছিলো। একটারও তো জাজমেন্ট হয়নি।"

তার মতে, এ ধরনের অপরাধের বিচার সেনা শাসনের সময়ই দ্রুত সম্ভব হয়।

"এটা মার্শাল ল' তে হয়। ধরে এনে, বিচার করে শাস্তি দেওয়া যায়। এটা তো ডেমোক্রেসিতে হয় না।"

সরকারের ভেতর ও বাইরে থেকে তদন্ত প্রতিবেদনটি অনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার দাবি উঠলেও সরকার এখনো তা করেনি। তবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ওই প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি হাতে পেয়েছে এবং তা ওয়েবসাইটে 'প্রকাশ' করা হয়েছে।

ওই অপ্রকাশিত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন পক্ষ থেকে সমালোচনা এসেছে- পুঁজি বাজারে অস্থিরতার আসল কারণ এবং এর জন্য দায়ী আসল ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে তদন্ত কমিটি।

ওই প্রতিবেদনে পুঁজি বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের শীর্ষ পদে পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এরইমধ্যে এ প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।

পুঁজিবাজার তদন্ত নিয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "তদন্ত প্রতিবেদনটি প্রশ্নবিদ্ধ ও হতাশাব্যঞ্জক। এটা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ৩৩ লাখ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর কাছেও তা গ্রহণযোগ্যতা পাবে না।"

পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থতার অভিযোগে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও গভর্নর আতিয়ার রহমানের অপসারণও দাবি করেন খসরু।

অবশ্য অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তার পদত্যাগের প্রশ্নই আসে না। তবে পুঁজিবাজারে অস্থিরতার সময়ে কোনো ক্ষেত্রে 'ক্রিমিনাল অফেন্স' রয়েছে কি না- তা দেখার জন্য আরো তদন্ত করার বিষয়ে একমত হয়েছেন তিনি। 

এসো মিলি প্রাণের উৎসবে






কালের কণ্ঠের :চৌধুরী আফতাবুল ইসলাম
প্রায় ৩০ হাজার বছর আগে প্যালিওলিথিক যুগের মানুষ গুহার পাথুরে দেয়ালে ছবি আঁকতে শুরু করেছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো গুহাচিত্রটি মিলবে ফ্রান্সের শোভেতে। স্পেনের আলতামিরার পাহাড়ের গায়ে প্রাগৈতিহাসিক যুগে আঁকা বাইসনটি প্রাচীনতম শ্রেষ্ঠ চিত্রকর্ম। প্রাচীন ইতিহাস আর খণ্ড সময় স্তব্ধ হয়ে আছে শ্রাবস্তির কারুকার্যে। মিসরের হায়ারোগি্লফিকের প্রচ্ছদে প্রচ্ছদে আছে ফারাওদের শ্রেষ্ঠত্বের উচ্চকিত ঘোষণা। আর তাতেই উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্ভবত নেপোলিয়ন তাঁর রাজকীয় প্রতীক করেছিলেন একটি মৌমাছি। কারণ হায়ারোগি্লফিকে শাসক শব্দটির চিত্রচিহ্ন মৌমাছি। এসব চিত্রকর্মের সৃষ্টি নিজেকে প্রকাশের তাগিদ থেকেই। ঠিক তেমনিভাবে আমরা মানে বাঙালির নিজস্বতার শ্রেষ্ঠতম পিক্টোরিয়াল স্ক্রিপ্টটি (চিত্রলিপি) তৈরি হয় প্রতি বৈশাখের প্রথম দিনটিতে। যেমন হবে আজও। নববর্ষ ১৪১৮-এর সূচনা দিনে আবারও বাংলার ত্রিমাত্রিক ক্যানভাস আরেকটি অনন্য শিল্পকর্ম হয়ে উঠবে। আজ বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরের প্রতিটি দৃশ্য যেন একটি জাতির আপন ঐতিহ্য, স্বাধীনতা আর আবহমান সংস্কৃতির নান্দনিক সনদচিত্র। চারপাশের
এরকম অজস্র ফ্রেমের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ হবে বাঙালির নিজস্বতা, ঐতিহ্য আর অহঙ্কারের চিত্রকর্মটি।
যদিও এখনো বাতাসে বসন্তের গন্ধ। আসমানে চৈত্রের নিদাঘ। এরই মধ্যে নতুনকে বরণের আয়োজন গ্রীষ্মকে ছোঁয়ার বাসনায়। বিশ্বায়নের বাজারে যখন গ্লোবাল জাতীয়তার জয়ধ্বনি, সাইবার স্পেস, স্যাটেলাইট টেলিভিশন আর সামাজিক নেটওয়ার্কের অলিগলিতে যখন বিশ্বসংস্কৃতির সুনামি_সেই সময়ে নিজেকে খুঁজে ফেরার তাগিদটা খুবই আশাজাগানিয়া। আমরা আমাদের আপন ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ এবং ধারণ করেই বিশ্ব নাগরিক হব_বাঙালি মানসে এই বোধটি এখন খুবই প্রবল।
সময় যতই এগিয়ে যাক, জীবন যতই দ্রুততর হোক, অগোচরে ঠিকই প্রতিটি বাঙালির মনের ভেতরে ডানা ঝাপটায় সাবেকি বাংলার প্রান্তিক সমাজ, লোকজ আচার-সুর। ওই যে, প্রাজ্ঞ মানুষেরা বলেন না, যতই বদলানোর হাতছানি থাক, সময়, নিজ প্রকৃতি, ঐতিহ্য কী এক প্রগাঢ় নিবিষ্টতায় ছুঁয়ে থাকে জীবনকে। যতই প্রতিযোগিতা থাক, ব্যস্ততা চেপে বসুক, চিরন্তন সেই রূপসী বাংলা ঠিকই বুকের ভেতরে জেগে থাকে। সে জন্যই নববর্ষের এই একটি দিনকে উপলক্ষ করে বাঙালির নিজস্ব উৎসবের এমন নিপাট আয়োজন। যেখানে ধর্ম নেই, শ্রেণী নেই, বিভেদ নেই_শুধুই এই ভূখণ্ডের নিজস্ব লোকাচারের সর্বজনীন দর্শনে উচ্ছ্বাসে মেতে থাকা।
_'তোমরা যেখানে সাধ চলে যাও_আমি এই বাংলার পারে রয়ে যাব; দেখিব কাঁঠালপাতা ঝরিতেছে ভোরের বাতাসে...।' শুভ নববর্ষ ১৪১৮।